প্রকাশিত: Wed, Jun 5, 2024 10:58 AM
আপডেট: Fri, May 9, 2025 7:40 AM

[১]অপার সম্ভাবনা নিয়ে ঘুমিয়ে আছে সার্ক

গোবিন্দ শীল: [২] আর্থ-সামাজিক, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, জ্বালানি ও আঞ্চলিক যোগাযোগের অপার সম্ভাবনা থাকলেও নিশ্চুপ অনড় হয়ে আছে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)।

[৩] বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাদের নতুন সময়কে বলেন, পৃথিবীর ২১ শতাংশ মানুষ যে অঞ্চলে বাস করে, সেখানে সার্কের মত একটি অপার সম্ভাবনময় সংগঠন ঘুমিয়ে আছে, এটি চিন্তা করা যায় না। 

[৪] তিনি বলেন, সার্কের শীর্ষ সম্মেলন ২০১৪ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হবার পর ২০১৬ সালের পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ বৈঠকটি আর হয়নি। কারণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঐ সম্মেলনে ভারতে সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এমন পরিবেশ বৈঠকের জন্য উপযোগী নয়।  বড় দেশ হিসেবে ভারতকেই সার্ক চালু করার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে, মত প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।   

[৫] সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হলেও নেপালে সার্ক সচিবালয় সচল রয়েছে। সার্কের বর্তমান মহাসচিব বাংলাদেশের গোলাম সারোয়ার গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানে একাধিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

[৬] দক্ষিণ এশিয়াতে সার্কের ৪ পৃথক মুক্ত বাণিজ্য হবার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল। এখান থেকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন বা আশিয়ানের মত মুক্ত কাস্টম্স ইউনিয়ন হবার বিশাল সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেটি আপাতত হচ্ছে না। 

[৭] গত বছরের জুন মাসে এক হিসেবে দেখা যায়, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, অর্থাৎ, আমদানি-রপ্তানি উভয়ই কমেছে। 

[৮] বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ১.৯১ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছর ২০২২- এ ছিল ১.৯৩ বিলিয়ন ডলার। ফলে, আলোচ্য সময়ে সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। 

[৯] এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম আমাদের নতুন সময়েকে বলেন, সার্ক সচল না থাকলেও এর আওতায় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে কোন জাত-পাত বা রাজনীতির বিষয় নেই। সার্কভুক্ত আটটি দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। 

[১০] এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সার্ক অকার্যকর থাকলেও এসব দেশের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে প্রায়ই নানা ধরণের মিটিং হচ্ছে এবং ব্যবসায়ীরা চান সার্ক পুনরায় সচল হোক। 

[১১] সার্ক শীর্ষ সম্মেলন না হবার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ডিপ্লোম্যাট সাময়িকী ২০১৭ সালে এক প্রবন্ধে উল্লেখ করে, ভারত সার্কের একটি সক্রিয় সদস্য ছিল, যে বিষয়টিকে প্রতিবেশীদের সাথে ভালো সম্পর্কের একটি উপায় হিসাবে দেখা হয়। এটি ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে, ভারতের ফোকাস পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। পাকিস্তানের সাথে সমস্যার প্রেক্ষিতে এটি এখন সার্কের চেয়ে বিমসটেকের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব